
খোকন গং এর অত্যাচারে দারাইলবাসী অতিষ্ঠ – পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক
শাহীন শাহ রিপোর্ট
গাজীপুর জেলার টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন দারাইল এলাকার কিলার, সন্ত্রাসী, ভুমিদস্যু ও মাদক ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন খোকন (৪২) গং এর অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ এবং জিম্মি হয়ে পড়েছে। খোকনের বিরুদ্ধে টঙ্গী পশ্চিম থানায় ৬ টি মামলা রয়েছে,পল্টন থানায় ১ টি মারামারি,বিস্ফোরক,হত্যা করার গ্রুপ মামলা রয়েছে। উত্তরা পূর্ব থানায় ২ টি মামলা রয়েছে তারমধ্যে ১টি হত্যা মামলা রয়েছে। যার এফআইআর নং ৩ এবং জিআর নং ১১৬, তাং ২১ আগষ্ট ২০২৪। ধারা -৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। মামলার বাদী লাইজু বেগম। বাদীর স্বামীকে খোকন গং হত্যা করেছে বলে মামলা করা হয়েছে এবং এই মামলায় খোকন বর্তমানে ফেরারি রয়েছে। এ ছাড়াও সন্ত্রাসী খোকন উত্তরা পূর্ব থানার বাকি মামলাটি সহ টঙ্গী পশ্চিম থানার ভুমিহারা ও মারধরে আহতের শিকার মামুন মিয়া সরাফতের মামলাতেও ওয়ারেন্টের আসামি। অনেক বারই খোকনের এলাকায় উপস্থিতির কথা,আমিন নিয়েবজমি জমা মাপঝোঁক করে দখল করতেছে এমনকি নিজ বাসায় দৈনিক রাত যাপন করার খবরাখবর অফিসার ইনচার্জ সহ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কে অবগত করলেও তাদের কোন পাত্তা দিতে দেখা যায়নি। আসলে দারাইল পশ্চিম পাড়া বটতলার বস্তিটিতে চলে খোকন গং এর মাদকের রমরমা ব্যবসা। যার সম্পুর্ন মাদকের চালান দেয় টঙ্গী সোনাভান বস্তির জাফর নামের একজন বড় পাইকার। তাই এই ব্যবসা চালাতে খোকন কে থানাতে মাসিক লাখো টাকা মাসোহারা দিতে হয়। তাইতো থানা পুলিশ খোকনের ব্যাপারে উদাসীন হয়ে থাকে। খোকনের বিরুদ্ধে গত সরকারের আমলে আওয়ামী যুব লীগের সক্রিয় সদস্য হিসেবে পল্টন থানায় বিস্ফোরক সহ হত্যা মামলাও হয়েছে। যার নং ২৫/৩৭৯। তাং ১৪-০৯-২৪ ইং ধারা
১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩০২/২০১/৩৮৪/১১৪/১০৯/৩৪ পেনাল কোড ১৯০৮. বিস্ফোরক আইনের ৩/৬ । পল্টন ও উত্তরা পূর্ব থানা মোট ২ টি হত্যা মামলা রয়েছে কুখ্যাত সন্ত্রাসী খোকনের বিরুদ্ধে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর রোজ শুক্রবার খোকন গং এর বিরুদ্ধে এক হিন্দু পরিবারের পৈতৃক সম্পত্তি মাপঝোঁক করে জবর দখল করার অভিযোগ এসেছে। ভুক্তভোগী মামলা করার জন্য থানায় দৌড়ঝাঁপ চালাচ্ছে কিন্তু থানায় মামলা নিতে চাচ্ছে না বলে জানা যায়। ইতিপূর্বে খোকনের বিরুদ্ধে হত্যা ও মারামারি মামলার কারনে খোকনের বাড়িতে পুলিশি তল্লাসী অভিযান চালালে, সেখানে দেশীয় অস্র ও বিপুল মাদক উদ্ধার করে। যার মামলা হয়েছে এবং সেই মামলায় খোকন জামিনে রয়েছে। খোকন,সুমন,আরিফ,সুন্দর আলী এরা প্রত্যেকেই হত্যা মামলার আসামী। খোকন আওয়ামী সরকারের আমলে যুব দলের সক্রিয় সদস্য হয়ে দারাইল এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। কিছু জেলা নেতাদের আশীর্বাদে,খোকন তৎকালিন সময় নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে গিয়েছে বলে প্রমান রয়েছে। এখন সরকার পাল্টি খাওয়াতে খোকন বিএনপির মিটিং মিছিলে যোগদান করে এবং এক পর্যায়ে হাসান সরকারের আশীর্বাদ নিতে সার্থক হয়েছে বলে জানা যায়। ধুরন্ধর খোকন বিএনপির বলিষ্ঠ নেতা হাসান সরকার কে এমপি হিসেবে দেখতে চাওয়ার কিছু পোস্টার ছাপিয়ে এলাকা ছয়লাপ করে দিয়েছে। কেননা সেখানে খোকনেরও ছবি দেয়া আছে। খোকন কিছুদিন আগে নিজের অপকর্ম টিকিয়ে রাখার জন্য স্থানীয় বিএনপি নেতাদের চামচামি করে চাঁদাবাজি, দখলবাজী সহ নানা অপকর্ম করে চলেছিল। এতে করে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার কারণে, খোকন যে আগে আওয়ামীলীগের দোসর ছিল এবং সন্ত্রাসী সহ নানা অপরাধে জড়িত ছিল সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএনপির দলীয় প্যাডের উপর লিখিত আকারে খোকন কে একজন সন্ত্রাসী ও আওয়ামী দোসর হিসেবে চিহ্নিত করে একটি চিঠি দেয় এবং সেখানে খোকন যেন কোন অংগ সংগঠনেই যোগ দিতে না পারে,সেই বিষয়ে আদেশ প্রদান করা হয়েছে। ভূমিদস্যু খোকন এলাকাতে মামুন মিয়া সরাফতের ওয়ারীশ সুত্রে পাওয়া জায়গা থেকে প্রথমে দেড় শতাংশ জায়গা ক্রয় করে। পরে সেই জায়গার সাথে আরো অতিরিক্ত জায়গা যোগ করে আর একটি ভূয়া সাক্ষর করা দলিল বানিয়ে জবরদখল করে ভোগ করে চলেছে। জাল দলিলের সাক্ষর যে কেউ খুব সহজেই বুঝতে পারবে যে এটা ভূয়া। সাক্ষরটি সম্পুর্ন আলাদা প্যটার্নে করা। এই জাল সহি করার জন্য খোকনের একজন অভিজ্ঞ সহি মাস্টার রয়েছে। যে কিনা আসলেই পেশায় একজন মাস্টার ছিলেন। সেই মাস্টারকে অনেকের জমি এভাবে জাল সহির মাধ্যমে কব্জা হয়ে যাওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিতারিত করেছিল। কিন্তু সেই মাস্টার কে খোকন শেলটার দিয়ে নিজের সাথে রেখেছে। তাইতো খোকন ইদানিং এলাকার নিরীহ গরীব মানুষদের জায়গা জমি ভূয়া দলিলের মাধ্যমে জবরদখল করে নিতে উঠেপড়ে লেগেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দুর্ধর্ষ খোকনের সোমন্দি সাইফুল ইসলাম, যে কিনা বিগত সরকারের আমলে এএসপি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি খোকন গং দের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সকল ধরনের সহযোগিতা করে থাকেন বলে বিশ্বস্ত সুত্র জানায়। খোকনের আপন ভাই আরিফ, ভাতিজা সুমন,ছোট বোন জামাই নাজমুল ,আপন ভাগিনা সুন্দর আলী সহ আরো কিছু নিজ আত্বীয় নিয়ে খোকন তৈরী করেছে এক সিন্ডিকেট। দেখা যায় পুরো পরিবারই সন্ত্রাসী গ্রুপ, আর এর অধিনায়ক হচ্ছে সাইফুল ইসলাম (বিগত আমলের এএসপি)। ভুক্তভোগী মামুন আলী সরাফত তার পরিবারবর্গ নিয়ে আজ দিশেহারা ও সর্ব শান্ত। এমনকি মামুন আজ জিম্মি হয়ে পড়েছে এই খোকন পরিবার সন্ত্রাস চক্রের কাছে। মামুনের পৈতৃক জমি দখল করে চলাফেরা করার রাস্তা বন্ধ করে সেখানে রাস্তার সাথে দেয়াল নির্মাণ করে রেখেছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর পিবিআই থেকে একটি মামলার নোটিশ আসে মামুনের বাড়ীতে। মামলাটি নাকি কোর্টে হয়েছে এবং তদন্তের জন্য পিবিআই তে দেয়া হয়েছে। মামলা নং- ২৬১/২৫। মামলার বাদী আরিফ, যে কিনা নিজেই বহু মামলার আসামী। মামলাটি থানায় না দিয়ে কোর্টে দেয়ার কি যুক্তিগতা রয়েছে এবং তা পিবিআই তে দিতে হবে, সেটা আমার বোধগম্য নহে। মামুন তো আসলে তেমন কোন অপরাধী না। পিবিআই তে যাওয়ার মত মামলা এটা নহে। পিবিআই তদন্তকারী কর্মকর্তা এনামুল হকের সাথে মুঠোফোনে মামলা বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বিস্তারিত জানায়। সাইফুল ইসলাম (বিগত আমলে এএসপি) ফোন করে এই মামলার ব্যপারে তদবীর করেছে বলে অভিযোগের কথা জানতে চাইলে এনামুল হক বলেন, ” অনেকেই তো ফোন করে আর কে যে সাইফুল ইসলাম তাতো মনে করতে পারছি না”। মামুন নাকি মাদকের ব্যবসা করে তেমনটা এনামুল হক জানালে আমি উত্তরে বললাম, মামুন মাদক বিক্রি তো দুরের কথা, সেবনও করে না। আপনি সেটাই তদন্ত করবেন এবং সঠিক রিপোর্ট টা আদালতে পেশ করবেন, এটাই আমরা আশা করি। আসলে মামলার ধারা তে দেখা গেল সেখানে মারামারি সংক্রান্ত কিছু ধারা দেয়া আছে। অথচ মামুন সংসার ছাড়া বাহিরে তেমন আড্ডা দেয় না বা তেমন কোন বন্ধু বান্ধবও তার নাই। সত্যিকার অর্থে বাদী আরিফ না শুধু,ওর পরিবারের সদস্যরাও একযোগে দারাইল পশ্চিম পাড়া বটতলা বস্তিতে চালাচ্ছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। এই খোকন গংয়ের নির্যাতন, মামলা হামলা সহ নানা হয়রানীতে মামুনের জীবন আজ নীভু নীভু প্রায়। এলাকাবাসীর কেহই এই আতংক খোকন গং এর বিরুদ্ধে কখনও কোন অভিযোগ করতে সাহস পায় না বলে জানা যায়। নানা অভিযোগে অভিযুক্ত ভূমিখেকো খোকনের নানা অপকর্মের ফিরিস্তি নিয়ে এ যাবত অনেক অনলাইন মিডিয়া সহ অনেক পত্রিকাতে সংবাদ প্রকাশিত হলেও টনক লড়ছে না পুলিশ প্রশাসনের। সম্ভবত এএসপি সাইফুল ইসলামের হস্তক্ষেপের কারনে। সংবাদ প্রচার করাতে কিছু সাংবাদিক কে নানা রকম হুমকি ধামকী দেয়ার অভিযোগও রয়েছে খোকনের বিরুদ্ধে। খোকন গংয়ের অত্যাচারের শিকার মামুন আলী সরাফত ও তার পরিবারবর্গ এখন সুবিচারের আশায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্রুত হস্তক্ষেপ একান্তভাবে আশা করছেন যেন অনতি বিলম্বে ভয়ংকর দানব খোকনকে আইনের আওতায় এনে সুবিচার নিশ্চিত করবেন।