1. live@www.kpcnewsmedialimited.online : News_AdMIN : KPC news media Limited KPC news media Limited
  2. info@www.kpcnewsmedialimited.online : KPC NEWS Media Limited :
রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৪২ পূর্বাহ্ন

সূরা ইয়াসীনে বর্ণিত হালাল ও হারামের বর্ণনা:*

প্রতিনিধির নাম :
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

*পর্ব-৫. সূরা ইয়াসীনে বর্ণিত হালাল ও হারামের বর্ণনা:*

সূরা ইয়াসীনে সরাসরি হালাল (Permissible) ও হারাম (Forbidden) বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা নেই। তবে কুরআনের অন্যান্য সূরার মতো এখানে ইঙ্গিতপূর্ণ আয়াত রয়েছে যা হালাল-হারামের মূলনীতি এবং এর গুরুত্ব বুঝতে সহায়তা করে। সূরার বিভিন্ন আয়াতের মাধ্যমে হালাল জীবনযাপন, আল্লাহর দেওয়া নিয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং হারাম কাজ থেকে দূরে থাকার আহ্বান করা হয়েছে। নিচে এই বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করা হলো:

*১. হালাল রিজিক-জীবিকা অনুসন্ধান:*

_আয়াত (৩৬:৩৩-৩৫):_ “তাদের জন্য একটি নিদর্শন হলো মৃত পৃথিবী; আমি একে জীবিত করি এবং তা থেকে শস্য উৎপন্ন করি, যার থেকে তারা আহার করে। আর আমি এতে খেজুর গাছ ও আঙুরের বাগান সৃষ্টি করেছি এবং এর মধ্যে প্রবাহিত করেছি ঝরনা। যাতে তারা এর ফল খেতে পারে।”

_ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ:_ এই আয়াত আল্লাহর দেওয়া হালাল রিজিকের প্রতি মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে। পৃথিবীর মৃত ভূমিকে জীবিত করে শস্য উৎপাদন করা এবং তা থেকে মানুষের জন্য খাদ্য প্রস্তুত করা আল্লাহর বিশাল নিয়ামত এবং সর্বসম্মতিক্রমে আল্লাহর বিধানে হালাল পদ্ধতি। এখানে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে যে, আল্লাহর দেওয়া বৈধ (হালাল) রিজিক গ্রহণ করা এবং এর জন্য কৃতজ্ঞ থাকা আবশ্যক।

_শিক্ষা ও উপদেশ:_ (ক). মানুষকে হালাল জীবিকা অনুসন্ধান করতে হবে। (খ). আল্লাহর দেওয়া নিয়ামত অপচয় করা বা অকৃতজ্ঞ হওয়া উচিত নয়। (গ). হারাম পথে রিজিক অর্জন করলে তা আল্লাহর অবাধ্যতার শামিল হবে।

*২ হারাম কাজ থেকে বিরত থাকা ও সাবধানতা অবলম্বন করা:*

_আয়াত (৩৬:১৮):_ জনপদের অধিবাসীরা বলল, ‘আমরা তো তোমাদেরকে (রাসূলদেরকে) অমঙ্গলের কারণ মনে করি, যদি তোমরা বিরত না হও, তবে তোমাদেরকে অবশ্যই পাথরের আঘাতে হত্যা করব এবং অবশ্যই স্পর্শ করবে তোমাদের উপর আমাদের পক্ষ থেকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি’। আয়াত (৩৬-১৯): রাসূলগণ বললেন, ‘তোমাদের অমঙ্গল তোমাদের সঙ্গেই। এটা কি এ জন্য যে, তোমাদেরকে উপদেশ দেওয়া হচ্ছে? বরং তোমরা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়।’

_ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ:_ এই আয়াতে কাফিরদের অপবাদ এবং হুমকির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যারা আল্লাহর রাসূলদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। তাদের বিদ্রোহ ও অশুভ কাজগুলো আল্লাহর নিষিদ্ধ (হারাম) কাজের মধ্যে পড়ে। আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করা এবং তাঁর রাসূলদের প্রতি বিদ্বেষ দেখানো প্রকাশ্য হারামের উদাহরণ।

_শিক্ষা ও উপদেশ:_ (ক). আল্লাহর প্রেরিত বার্তা প্রত্যাখ্যান করা এবং সত্যের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হারাম। (খ). বিদ্রোহী মনোভাব ও জুলুম থেকে দূরে থাকা উচিত।

*৩. মুশরিকদের ভুল বিশ্বাস হারামের অন্তর্ভুক্ত:*

_আয়াত (৩৬:৪৭):_ “তাদের যখন বলা হয়, ‘আল্লাহ তোমাদের যা রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে দান কর,’ তখন তারা যারা কুফর করেছে, তারা ঈমানদারদের বলে, ‘আমরা কি তাদের খাওয়াব, যাদেরকে আল্লাহ খাওয়াতে চাননি?’”

_ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ:_ এই আয়াত মুশরিকদের ভুল ধারণার কথা তুলে ধরে। তারা আল্লাহর দেওয়া রিজিককে নিজের মনে করত এবং দান করতে অপারগতা প্রকাশ করত। এটি তাদের কৃপণতা এবং অন্যায়ের প্রমাণ। দান করতে অস্বীকার করা এবং সম্পদে অহংকার করা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এটি এক প্রকার হারাম কাজ।

_শিক্ষা ও উপদেশ:_ (ক). সম্পদের অহংকার করা এবং গরিবদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হারাম। (খ). হালাল পথে অর্জিত সম্পদ থেকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান করা আমলে সালিহার অন্তর্ভুক্ত।

*৪ মিথ্যা উপাস্য গ্রহণ একটি জঘন্য শির্ক:*

_আয়াত (৩৬:৬০-৬১):_ “আমি কি তোমাদের প্রতি আদেশ করিনি, হে আদম সন্তানেরা, যে তোমরা শয়তানের ইবাদাত করবে না, সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু? এবং তোমরা আমারই ইবাদাত করবে, এটাই সরল পথ।”

_ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ:_ এই আয়াতে স্পষ্টভাবে শয়তানের উপাসনা নিষিদ্ধ (হারাম) এবং একমাত্র আল্লাহর ইবাদতকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শির্ক বা মিথ্যা উপাস্য গ্রহণ করা আল্লাহর নিকট সবচেয়ে ঘৃণিত কাজ। এ আয়াত থেকে হারাম কাজের মূল ভিত্তি হলো শির্ক, তা প্রমানিত হয় এবং শয়তানের অনুসরণ একটি হারাম কাজ, তা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে, বিষয়টি পরিষ্কার হয়।

_শিক্ষা ও উপদেশ:_ (ক). শির্ক ও শয়তানের পথ অনুসরণ করা হারাম। (খ). তাওহীদ (একত্ববাদ) হলো আল্লাহর নির্দেশিত হালাল পথ, এই হালাল পথেই রয়েছে একমাত্র মুক্তি।

*৫ গায়েব বা অদৃশ্য বিষয়ে আল্লাহর ইল্‌ম:*

_আয়াত (৩৬:১২):_ “নিশ্চয়ই আমরা মৃতদের জীবিত করব এবং যা তারা আগে করেছে এবং যা তারা পেছনে রেখে গেছে, তা লিখে রাখব।”

_ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ:_ এই আয়াতে আল্লাহর সর্বজ্ঞতা এবং মানুষের কর্মফলের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। মানুষের সব কাজ, হালাল বা হারাম সবই আল্লাহর কাছে লিপিবদ্ধ হয়। হারাম কাজ করা বা তার প্রচার-প্রসার করা মানুষের জন্য আখিরাতে ভয়াবহ শাস্তির কারণ হবে।

_শিক্ষা ও উপদেশ:_ (ক). সব কাজ আল্লাহর সামনে লিপিবদ্ধ হচ্ছে, তাই হারাম কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। (খ). আখিরাতের শাস্তি থেকে বাঁচতে হালাল কাজ করতে হবে।

*৬. উপসংহার:*

সূরা ইয়াসীন সরাসরি হালাল ও হারামের প্রসঙ্গ বিশদভাবে আলোচনা না করলেও, এর বিভিন্ন আয়াত আল্লাহর দেয়া হালাল রিজিক গ্রহণ, হারাম কাজ থেকে দূরে থাকা এবং তাওহীদকে অনুসরণের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়।

(ক). হালাল কাজের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে, যেমন আল্লাহর দেওয়া নিয়ামতের সঠিক ব্যবহার এবং দান-সদকা।

(খ). হারাম কাজের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে, যেমন শির্ক, যুলুম এবং শয়তানের অনুসরণ।

(গ). এসব আয়াত থেকে শিক্ষা নিয়ে মুসলমানদের উচিত তাদের জীবনে হালাল-হারামের সীমারেখা বজায় রাখা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সচেষ্ট থাকা।

*আল্লাহ-হুম্মা সাল্লী, ওয়া সাল্লিম, ওয়া বারিক আ’লা মুহাম্মাদ; আল-হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আ’লামীন*। (মুসা: ০৩-১০-২৫)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট