সুব্রত চন্দ্র দাস হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন: চরজব্বর থানা পুলিশের চমকপ্রদ সাফল্য!
মোহাম্মদ আবু নাছের
নোয়াখালী জেলার চরজব্বর থানার পশ্চিম চরজুবলী এলাকায় সংঘটিত সুব্রত চন্দ্র দাস (৪৭) হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ঘটনার প্রকৃত কারণ ও মূল আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে চরজব্বর থানা পুলিশ, যা নোয়াখালী জেলা পুলিশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
শুক্রবার ( ১৭ অক্টোবর ) নোয়াখালী জেলা পুলিশ জানায়, গত ১৩ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ দুপুর আনুমানিক ১:৪৫ মিনিটে, চরজুবলীর একটি পাকা রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় সুব্রত চন্দ্র দাসের নিথর দেহ। তার ভাই বাদী হয়ে চরজব্বর থানায় মামলা নং-০২, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড অনুযায়ী হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল্লাহ-আল-ফারুক এর নির্দেশনায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম এর নেতৃত্বে একাধিক টিম মাঠে নামে। তথ্য-প্রযুক্তি, প্রত্যক্ষদর্শী বয়ান ও গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি হিসেবে নূর মোহাম্মদ (৫৭)-কে শনাক্ত করা হয়।
পরবর্তীতে, গত ১৬ অক্টোবর ২০২৫ রাত আনুমানিক ১১টা ০৫ মিনিটে, নোয়াখালীর সুধারাম থানার ধর্মপুর ইউনিয়নের উত্তর ওয়াপদা বাজার এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই রাতে জসিম ড্রাইভারের বাড়ি থেকে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত নূর মোহাম্মদ পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
তিনি জানান, ঘটনার দিন দুপুরে ভাগিনা ফয়সালকে সঙ্গে নিয়ে শ্রমিকদের খাবার পৌঁছাতে যান। একই সময় বিপরীত দিক থেকে আসা ভিকটিম সুব্রত চন্দ্র দাস তার মোটরসাইকেল দিয়ে হঠাৎ ব্রেক করলে পড়ে যান, এবং নূর মোহাম্মদের মোটরসাইকেলটি তার গায়ের উপর দিয়ে চলে যায়। এর ফলে সুব্রত চন্দ্র দাসের গলায় আঘাত লেগে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু ঘটে। তিনজন প্রত্যক্ষদর্শীও পুলিশের কাছে একই বয়ান দিয়েছেন।
নূর মোহাম্মদ ইতিমধ্যে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। মামলাটির তদন্ত এখনো অব্যাহত রয়েছে।
নোয়াখালী জেলা পুলিশ জানায়, “বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই এ ঘটনাকে ‘প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা’ হিসেবে প্রচার করা হয়, যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর এবং তদন্তের স্বার্থে অনভিপ্রেত।” তারা সকল সংবাদকর্মী ও নাগরিককে যাচাই-বাছাই ছাড়া তথ্য প্রচার না করার আহ্বান জানিয়েছেন, কারণ এতে জনমনে বিভ্রান্তি ও সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।
[হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক আসামির ছবি ব্লার করা হয়েছে]