
২০০১-২০০৬ বিএনপির শাসনামলে
বিএনপির ভালো কাজের একটা নমুনা
আপনার আদরের কন্যা সন্তান যাকে পরম মমতায় লালন পালন করেছেন। কখনো কন্যার শরীরে ফুলের টোকাও লাগতে দেননি। শত কষ্ট করে হলেও কন্যার আবদার পূরন করেছেন। বাবাদের মাথায় রাজ মুকুট না থাকলেও প্রত্যেকটি কন্যা সন্তান তার বাবার কাছে রাজকন্যা হিসাবেই বিবেচিত হয়।
সেই আদরের কন্যার চাঁদমুখটি যখন প্রতিবেশী কোন বখাটের প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার কারনে এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়ে ঝলসে যায়, বাবা হিসাবে অনুভুতিটা কেমন হতে পারে একটু চিন্তা করে দেখুনতো?
একটা সময় বাংলাদেশে অহরহ এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান এবং পারিবারিক বিরোধের কারনে এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়ে কত শত নারীর মুখ ঝলসে গেছে তার সঠিক হিসাবও কেউ রাখেনি।
আনন্দের বিষয় হচ্ছে সেই ভয়াবহ এসিড সন্ত্রাস এখন নিয়ন্ত্রণে। কিভাবে নিয়ন্ত্রণ হলো? কারা নিয়ন্ত্রণ করলো এই এসিড সন্ত্রাস? আসুন সেটা একটু জানি।
২০০১ সালে বিএনপি সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তার আগের বছর সারা দেশে ১৬৮ টি এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে। এবং এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধি পেতে থাকে। ২০০২ সাল পর্যন্ত এই সংখ্যা বেড়ে হয় ৪৯৬টি।
বিএনপি সরকার এই সামাজিক ব্যাধি এসিড সন্ত্রাসের ভয়াবহতা অনুধাবন করে জাতীয় সংসদে “এসিড সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০২” পাশ করে।
এই আইনের আওতায় এসিড সন্ত্রাসের সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ড এবং সর্বনিন্ম শাস্তি ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড নির্ধারন করা হয়।
বিএনপি সরকার এই আইন করেই বসে থাকে নাই। আইন প্রণয়নের পাশাপাশি সরকার এসিড-হামলা রোধে মনিটরিংও শুরু করে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘ন্যাশনাল অ্যাসিড কন্ট্রোল কমিটি’ (এনএসিসি) ও ‘ডিসট্রিক্ট অ্যাসিড মনিটরিং কমিটি’ (ডিএএমসি) নামক দুটো ইউনিট গঠন করা হয় এ উদ্দেশ্যে। এর ফলে অ্যাসিডের উৎপাদন, আমদানি ও বিক্রয়ের বৈধতা সীমাবদ্ধ করার পাশাপাশি আগের মতো যত্রতত্র অ্যাসিড বেচাকেনাও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
আবার কোথাও কোনো অ্যাসিড-সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই মামলা দায়ের হয়ে যেত এবং বিশেষ ট্রাইবুনালে এ মামলা পরিচালিত হতো। এসিড নিক্ষেপ মামলার বিচার সর্বোচ্চো ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির বিধান রাখা হয় আইনে।
এছাড়া পত্রপত্রিকা এবং টেলিভিশন মিডিয়ায় এসিড সন্ত্রাস দমন আইনের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি এসিড সন্ত্রাস প্রতিরোধে বিভিন্ন এনজিও ও টিভি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের মানুষকে সচেতন করার সমন্বিত প্রচেষ্টা চালায় বিএনপি সরকার।
বিটিভিতে বহুল প্রচারিত একটা বিজ্ঞাপন ছিল এই শিরোনামে “যৌতুকের টাকা না দিলে মিনুর সুন্দর মুখ আর সুন্দর থাকবো না” বিজ্ঞাপনের ভিডিওটা কমেন্ট দিয়ে দিবো দেখে নিয়েন। এই বিজ্ঞাপনটিও মানুষের মাঝে ব্যাপক সারা ফেলে।
২০০১-২০০৬ সালের বিএনপি সরকারের এমন বহু সফলতা রয়েছে যা সারা বিশ্বে অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। এইতো বছর কয়েক আগে এসিড সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের সফলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে কম্বোডিয়াতে বাংলাদেশের আদলে এসিড সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ আইন প্রনয়ণ করা হয়েছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ অনেকেই বিএনপিকে শুধু ভোটের রাজনীতির প্রতিপক্ষ হওয়ায় এবং তাদের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য শত অপপ্রচার প্রপাগাণ্ডা চালিয়ে বিএনপি ঠেকাও মিশনে লিপ্ত হচ্ছে।
এই অপপ্রচার প্রপাগাণ্ডায় অনেক বিএনপি সমর্থক ভাই ব্রাদারকেও প্রভাবিত হতে দেখি। বিএনপির সমর্থক ভাই-বোন এবং এই জেনারেশনের তরুণ তরুণীদের অনুরোধ করছি বিএনপির উপর আস্থা রাখুন। আপনাকে এতটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি আপনার সমর্থন এবং আস্থার যথাযথ মূল্যায়ন করবে বিএনপি।
সকলের সুস্থতা এবং দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
©