
ওয়াহিদা রহমান ও বৈজয়ন্তীমালা: বলিউডের স্বর্ণযুগের দুই মহারানী
ভারতীয় চলচ্চিত্রের পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের দুই উজ্জ্বল তারকা হলেন ওয়াহিদা রহমান এবং বৈজয়ন্তীমালা। তাঁরা দু’জনেই তাঁদের সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন, তবে তাঁদের অভিনয় দক্ষতা এবং জনপ্রিয়তার ধরণ ছিল ভিন্ন, যা স্বর্ণযুগের সিনেমাকে আরও সমৃদ্ধ করেছিল।
বৈজয়ন্তীমালা ছিলেন দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার প্রথম সুপারস্টার যিনি বলিউডে এসে আধিপত্য বিস্তার করেন। তাঁর মূল আকর্ষণ ছিল অসাধারণ নৃত্যশৈলী (বিশেষত ভারতনাট্যম), যা তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রে নিয়ে আসেন। তাঁর প্রাণবন্ততা, গ্ল্যামার এবং বাণিজ্যিক ছবিতে তাঁর অসামান্য সাফল্য ছিল লক্ষণীয়। ‘নাগিন’, ‘মধুমতি’ এবং ‘সঙ্গম’-এর মতো ছবিগুলিতে তিনি প্রমাণ করেন যে তিনি কেবল সুন্দরী নন, একজন দুর্দান্ত অভিনেত্রীও। বৈজয়ন্তীমালার জনপ্রিয়তা ছিল মূলত তাঁর ডান্সিং ডিভা ইমেজ, প্রাণবন্ততা এবং একের পর এক ব্লকবাস্টার হিট দেওয়ার সক্ষমতার ওপর প্রতিষ্ঠিত।
অন্যদিকে, ওয়াহিদা রহমান তাঁর শান্ত, স্নিগ্ধ সৌন্দর্য এবং গভীর সংবেদনশীল অভিনয়ের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। গুরু দত্তের ‘পিয়াসা’ এবং ‘কাগজ কে ফুল’-এর মতো ছবিতে তাঁর সূক্ষ্ম অভিনয় তাঁকে সমালোচকদের প্রিয় করে তোলে। ‘গাইড’ ছবিতে রোজির মতো জটিল এবং স্বাধীনচেতা চরিত্রে তাঁর অভিনয় ছিল ঐতিহাসিক। ওয়াহিদা রহমানের অভিনয় দক্ষতার মূল ভিত্তি ছিল তাঁর অর্থপূর্ণ চোখের অভিব্যক্তি এবং সংযত আবেগ। তাঁর জনপ্রিয়তা এসেছিল তাঁর ক্লাসিক্যাল গ্রেস, অভিনয়ের গভীরতা এবং চরিত্রের প্রতি তাঁর সৎ মনোভাব থেকে। তিনি সেই যুগের এক অসামান্য ও মর্যাদাপূর্ণ অভিনেত্রী।
তুলনা করলে দেখা যায়, বৈজয়ন্তীমালা যেখানে নৃত্য এবং গ্ল্যামারের মাধ্যমে বাণিজ্যিক সাফল্য এনেছিলেন, ওয়াহিদা রহমান সেখানে সূক্ষ্ম অভিনয় ও মানসিক গভীরতার মাধ্যমে দর্শকদের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নেন। দু’জনেই তাঁদের স্বতন্ত্র পথে হেঁটে বলিউডের স্বর্ণযুগকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছেন। janas media