
মালা সিনহা ও মুমতাজ: স্বর্ণযুগের দুই অভিনেত্রী
বলিউডের পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের চলচ্চিত্রকে যাঁরা তাঁদের অভিনয় দক্ষতা এবং জনপ্রিয়তা দিয়ে উজ্জ্বল করে রেখেছিলেন, তাঁদের মধ্যে মালা সিনহা এবং মুমতাজ হলেন দুই উল্লেখযোগ্য তারকা। এই দুই অভিনেত্রী তাঁদের স্বতন্ত্র স্টাইল এবং কর্মজীবনের ভিন্ন পথ দিয়ে হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে নিজেদের স্থান পাকা করে নিয়েছেন।
মালা সিনহা ছিলেন সেই সময়ের নাটকীয় গভীরতা ও ভার্সেটিলিটির প্রতিচ্ছবি। তিনি পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি থেকেই চলচ্চিত্রে সক্রিয় ছিলেন এবং তাঁর অভিনয় প্রায়শই ছিল গভীর, তীব্র এবং চ্যালেঞ্জিং। গুরু দত্তের ‘পিয়াসা’ বা বি.আর. চোপড়ার ‘ধুল কা ফুল’-এর মতো ছবিতে তাঁর চরিত্রায়ণ প্রমাণ করে তিনি কেবল গ্ল্যামারাস নায়িকা ছিলেন না, বরং একজন শক্তিশালী অভিনেত্রী ছিলেন। তিনি কঠিন এবং প্রায়শই দ্বিধাগ্রস্ত বা ট্র্যাজিক নারীর চরিত্রে অভিনয় করে বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেন। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি ইন্ডাস্ট্রির প্রধান নায়িকা হিসেবে কাজ করেছেন, যা তাঁর অভিনয় দক্ষতার নির্ভরযোগ্যতা প্রমাণ করে।
অন্যদিকে, মুমতাজ বলিউডে এক ভিন্ন পথ ধরে জনপ্রিয়তার শিখরে আরোহণ করেন। পার্শ্বচরিত্র বা স্টান্ট অ্যাক্ট্রেস হিসেবে শুরু করলেও, ষাটের দশকের শেষ দিকে তিনি নিজেকে এক আকর্ষণীয় ও প্রাণবন্ত নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। বিশেষ করে রাজেশ খান্নার সঙ্গে তাঁর জুটি ছিল বক্স অফিসে অসম্ভব সফল। ‘খিলোনা’, ‘দো রাস্তে’-এর মতো ছবিগুলিতে তাঁর অসাধারণ নাচ, প্রাণোচ্ছল হাসি এবং সহজাত অভিনয় তাঁকে বিপুল জনপ্রিয়তা এনে দেয়। মুমতাজ সেই সময়ে সাহসী এবং আধুনিক নারীর প্রতিচ্ছবি ছিলেন, যা তাঁকে তাঁর সময়ের অন্যতম সেরা গ্ল্যামার কুইন করে তুলেছিল।
তুলনা করলে দেখা যায়, মালা সিনহা যেখানে নাটকীয়তার এবং চরিত্রের গভীরতার ওপর জোর দিয়েছিলেন, মুমতাজ সেখানে সহজাত হাসি ও গ্ল্যামারাস উপস্থিতির মাধ্যমে দর্শকদের মন জয় করেছিলেন। এই দুই অভিনেত্রীর স্বতন্ত্র শৈলীই প্রমাণ করে যে বলিউডের স্বর্ণযুগ কতটা বৈচিত্র্যময় ছিল। তাঁরা দু’জনেই তাঁদের অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। janas media