1. live@www.kpcnewsmedialimited.online : News_AdMIN : KPC news media Limited KPC news media Limited
  2. info@www.kpcnewsmedialimited.online : KPC NEWS Media Limited :
রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫১ অপরাহ্ন

ফরজ সালাতের পর ব্যক্তিগত দো‘আ:* *কুরআন ও হাদীসের আলোকে বিশ্লেষণ*

প্রতিনিধির নাম :
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

*ফরজ সালাতের পর ব্যক্তিগত দো‘আ:*
*কুরআন ও হাদীসের আলোকে বিশ্লেষণ*

_ভূমিকা:_ সালাত ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত। এটি শুধু শারীরিক কসরত নয়, বরং বান্দা ও রব্বের অন্তরঙ্গ সংলাপ। আর দো‘আ হলো সালাতের প্রাণ। কুরআনে বারবার দো‘আ করার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে: “তোমার রব্ব বলেছেন: আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।” (সূরা গাফির, ৪০:৬০)! এ কারণে দো‘আ ইবাদতের মূল হিসেবে পরিচিত। কিন্তু প্রশ্ন আসে, ফরজ সালাত শেষ হওয়ার পর . দো‘আ করা কি ইসলামের অংশ? নাকি এটি পরে সংযোজিত একটি প্রথা? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য স আমাদেরকে কুরআন, হাদীস এবং ইসলামের মূল নীতি-দর্শনের আলোকে বিষয়টি বিশ্লেষণ করতে হবে।

_মূল আলোচনা: আমার প্রিয় অনুজ কেডেট কলেজের বন্ধু তৌহিদুল ইসলাম কোহেন সিঙ্গাপুর থেকে সাতটি পয়েন্ট উল্লেখ করে একটি মতামত পেশ করেছে। নিম্নে সেই পয়েন্টগুলোর সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ পেশ করা হলো:_

*পয়েন্ট-১: প্রত্যেকের দো‘আ নিজস্ব হওয়া উচিত:*

কুরআনে আল্লাহ বলছেন: “আর আমার বান্দা যখন আমার সম্পর্কে তোমাকে জিজ্ঞেস করে, (তখন বলে দাও যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। দো’আকারী যখন আমাকে ডাকে আমি তার ডাকে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে”। (সূরা বাকারা, ২:১৮৬)! এটি রব্ব ও বন্দোর মধ্যে অসাধারণ একটি ব্যক্তিগত সম্পর্কের ঘোষণা। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: “দো‘আ ইবাদতের মূল”। (তিরমিজি)! অতএব, ব্যক্তিগত দো‘আ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। পর্যবেক্ষণ: ব্যক্তিগত দো‘আকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত।

*পয়েন্ট-২: দেশের জন্য, মহামারীর জন্য, বৃষ্টির জন্য সম্মিলিত দো‘আ যুক্তিযুক্ত*

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাহাবীদের নিয়ে বৃষ্টির জন্য দো‘আ করেছেন (র সালাত), মৃতের জন্য জানাযা সালাতের মধ্যে সম্মিলিত দো‘আ করেছেন। পর্যবেক্ষণ: বিশেষ প্রয়োজনে সম্মিলিত দো‘আ সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। .

*পয়েন্ট-৩: রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ফরজ সালাত শেষে সম্মিলিত দো‘আ করেননি, বরং দ্বীন শিক্ষা দিতেন:*

হাদীসে পাওয়া যায় যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সালাত শেষে সাহাবীদের দ্বীন শিক্ষা দিতেন, তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতেন। (বুখারী, মুসলিম)
তবে ফরজ সালাত শেষে নিয়মিত সম্মিলিত দো‘আ করার কোনো প্রমাণ নেই। পর্যবেক্ষণ: শিক্ষার জন্য সম্মিলিত দো‘আ করেছেন প্রমাণিত নয়।

*পয়েন্ট-৪: বর্তমানে উম্মাহর ঐক্যের জন্য সম্মিলিত দো‘আ উপকারী হতে পারে কি?:*

ঐক্য ইসলামের অন্যতম লক্ষ্য: “নিশ্চয়ই মুমিনরা পরস্পরের ভাই।” (সূরা হুজুরাত, ৪৯:১০)!

তবে ফরজ সালাতের পরে নিয়মিত সম্মিলিত দো‘আ করা সুন্নাহ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত নয়। তাই এটিকে বাধ্যতামূলক বা অপরিহার্য করা যাবে না। পর্যবেক্ষণ: সম্মিলিত দো’আ মুবাহ (অনুমোদিত) কাজ হতে পারে, তবে ইবাদতের অংশ হিসেবে নয়।

*পয়েন্ট-৫: আরবি না জানা মানুষদের জন্য সম্মিলিত দো‘আ শিক্ষার মাধ্যম:*

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর সাহাবীদের বিভিন্ন দো‘আ শিক্ষা দিয়েছেন, তাই শিক্ষার ক্ষেত্রটি গুরুত্বপূর্ণ। আজকের যুগে সাধারণ মানুষ দো‘আ শিখতে সম্মিলিত দো‘আ কাজে লাগতে পারে। পর্যবেক্ষণ: শিক্ষা হিসেবে সম্মিলিত দো‘আ উপকারী, তবে এটি অভ্যাসগত ইবাদত নয়।

*পয়েন্ট-৬: রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং সাহাবীদের যুগে ফরজ সালাতের পরে সম্মিলিত দো’আর প্রয়োজন ছিল না, এখন সম্মিলিত দো’আর প্রয়োজনীয়তা আছে কি:*

শরীয়তের বিধান সময়ের সাথে সপরিবর্তিত হয় না। ইবাদত চিরন্তন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যদি কোনো আমল নিয়মিত না করতেন, আমরা তাকে স্থায়ী আমল বানাতে পারি না।

পর্যবেক্ষণ: এই যুক্তি অত্যন্ত দুর্বল। তবে কেউ যদি মনে করে উম্মাহর প্রয়োজন অনুযায়ী মুবাহ কাজ হিসেবে সালাতের শেষে সম্মিলিত দো‘আ হতে পারে, তবে এমন যুক্তি অত্যন্ত দূর্বল এ কারণে যে সালাতের মধ্যেই সম্মিলিত দো’আ ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে; সুতরাং সালাত শেষে সম্মিলিত দো’আর কোন প্রয়োজন নেই।

*পয়েন্ট-৭: ফরজ সালাতের পরে কি দো‘আ কবুলের সময়?*

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: “বান্দা তার রব্বের সবচেয়ে নিকটবর্তী হয় যখন সে সিজদায় থাকে, তাই তোমরা (সিজদায়) বেশি বেশি দো‘আ করো।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস-৪৭৯ (কিতাবুস সালাত)!

আর অন্য রেওয়ায়েত এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: *“تُسْتَجَابُ الدَّعْوَةُ فِي آخِرِ الصَّلاَةِ”* “সালাতের শেষ অংশে দো‘আ কবুল হয়।” (আবু দাউদ:১৫২৪; তিরমিজি:৩৪৯৯)!

আলেমদের ব্যাখ্যা: “সালাতের শেষে দো‘আ” বলতে সালামের আগে, অর্থাৎ তাশাহহুদের পর থেকে সালাম ফিরানোর আগ পর্যন্ত সময়কে বোঝানো হয়েছে। (ইমাম নববী, শারহ মুসলিম; ইবনুল কাইয়্যিম, জাদুল মা‘আদ)! অর্থাৎ, এটি সালাতের ভেতরের অংশ, বাহিরে সালাত শেষ হওয়ার পর নয়।

পর্যবেক্ষণ: দো‘আ করার উত্তম সময় ফরজ সালাতের ভেতরের কিছু অংশ দাঁড়িয়ে, রুকুতে, রুকু থেকে উঠে, সাজদায়, দুই সাজাদার মাঝে বসে, বৈঠকে তাশাহহুদ পাঠ এবং তাশাহ্হুদের পরে এবং সালাম ফিরানোর পূর্বে দো’আ করা। সুতরাং ফরজ সালাত শেষে সম্মিলিত দো‘আ সরাসরি সুন্নাহ হিসেবে সাব্যস্ত নয়।

*উপসংহার:*

কুরআন ও হাদীসের আলোকে মূল বিষয় হলো: (ক). ব্যক্তিগত দো‘আ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। (খ). বিশেষ প্রয়োজনে (বৃষ্টি, মহামারী, জানাযা) সম্মিলিত দো‘আ করা সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। (গ). ফরজ সালাত শেষে নিয়মিত সম্মিলিত দো‘আ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও সাহাবাগণ থেকে প্রমাণিত নয়, তাই এটিকে শরীয়তের কোন অংশ বানানো যাবে না।

মুসলিমদের উচিত ব্যক্তিগত দো‘আকে গুরুত্ব দেওয়া। ইবাদতের আসল সৌন্দর্য হলো, “বান্দা ও রবের একান্ত সংলাপ-দো’আ”।

*আল্লাহ-হুম্মা সাল্লি, ওয়া সাল্লিম, ওয়া বারিক আ’লা মুহাম্মাদ; আল-হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আ’লামীন*। (মূসা: ১৮-০৯-২৫)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট