
মান্না ও মিঠুন চক্রবর্তী: বক্স অফিসের দুই মহা নায়ক
ভারতীয় উপমহাদেশীয় চলচ্চিত্রে মান্না এবং মিঠুন চক্রবর্তী হলেন দুই মহীরুহ, যাঁরা নিজেদের অভিনয় দক্ষতা ও ক্যারিশমার মাধ্যমে দুই দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে স্থায়ী আসন গড়েছেন। দু’জনেই অ্যাকশন এবং গণ-দর্শকের নায়ক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছেন, যদিও তাঁদের কর্মক্ষেত্র এবং উত্থানের প্রেক্ষাপট ভিন্ন ছিল।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে মান্না এক অনিবার্য নাম, যিনি ‘মেগা স্টার’ হিসেবে পরিচিত। নব্বইয়ের দশক থেকে শুরু করে ২০০০-এর দশকের প্রথমভাগ পর্যন্ত তিনি একচ্ছত্রভাবে রাজত্ব করেছেন। তাঁর অভিনয় দক্ষতার মূল বৈশিষ্ট্য ছিল তীব্র আবেগ, জ্বলন্ত সংলাপ ডেলিভারি এবং সামাজিক প্রতিবাদী চরিত্রে তাঁর অনবদ্য উপস্থিতি। সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো চরিত্রে মান্না ছিলেন অদ্বিতীয়। ‘দাঙ্গা’, ‘আম্মাজান’ বা ‘কাশেম মালার প্রেম’-এর মতো ছবিগুলি তাঁর জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে, যা সরাসরি গণমানুষের হৃদয়ে গেঁথে গিয়েছিল। তাঁর অভিনয় ক্ষমতা ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী এবং আবেগপ্রবণ, যা তাঁর চরিত্রগুলিকে জীবন্ত করে তুলত।
অন্যদিকে, মিঠুন চক্রবর্তী ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক ব্যতিক্রমী তারকা। মৃণাল সেনের মতো পরিচালকের ‘মৃগয়া’ দিয়ে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু হলেও, পরে তিনি ‘ডিস্কো ড্যান্সার’-এর মতো ছবি দিয়ে এক বিশাল জনপ্রিয়তা লাভ করেন। অ্যাকশন, নাচ এবং সহজ-সরল অভিনয়—এই ত্রয়ী তাঁকে বলিউড এবং বাংলা, উভয় ক্ষেত্রেই এনে দিয়েছে সাফল্য। তাঁর কমন ম্যান ইমেজ, অসাধারণ এনার্জি এবং যে কোনো চরিত্রে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা তাঁকে দীর্ঘস্থায়ী স্টারডম দিয়েছে। মিঠুন তাঁর নাচের দক্ষতা ও অ্যাকশন দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করে রাখতেন।
তুলনা করলে দেখা যায়, মিঠুন যেখানে নাচ এবং ভার্সেটাইল অ্যাকশনের মাধ্যমে দর্শকদের মন জয় করেছেন, মান্না সেখানে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং জ্বলন্ত আবেগের মাধ্যমে দর্শকদের সাথে গভীর সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন। দু’জনেই প্রমাণ করেছেন, আন্তরিকতা ও ক্যারিশমা দিয়েই দর্শকদের মন জয় করা যায়। তাঁরা তাঁদের নিজ নিজ দেশের অ্যাকশন সিনেমার কিংবদন্তী হিসেবে চিরকালই পূজিত হবেন। janas media